৩০৬ মিনিট আগের আপডেট; দিন ৪:২৫; শুক্রবার ; ১৮ এপ্রিল ২০২৪

পশুর হাটে মানুষের উপচেপড়া ভিড় মানছে না স্বাস্থ্যবিধি

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ২০ জুলাই ২০২১, ১২:২০

করোনা মহামারির মধ্যে ঈদুল আজহায় সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পশুর হাট বসার নির্দেশ থাকলেও কক্সসবাজারে অধিকাংশ পশুর হাট তা মানছে না। 

তা মধ্যে খরুলিয়া পশুর হাটের অবস্থা নাজুক। উধাও করোনা সতর্কতা। মাস্ক পরে থাকতে অনীহা বেশির ভাগ ক্রেতার। হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব রক্ষার তোয়াক্কা করছেন না ক্রেতা-বিক্রেতারা।

কক্সবাজারে সদরের ঐতিহ্যবাহী এই পশুর হাটে করোনা সচেতনতায় দৃশ্যমান চোখে কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। হাটের ব্যাপারীরা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করছেন অহরহ। বৃষ্টির পানি জমে হাট হয়ে উঠেছে কর্দমাক্ত। সেখানে হাজার হাজার ক্রেতারা চলাচল করতে গেলেও জটলা তৈরি হয়ে যাচ্ছে। শারীরিক দূরত্ব রক্ষার তাগিদ নেই কারও।

করোনা পরিস্থিতিতে পশুর হাটের জন্য ১২টি নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। যার বেশির ভাগই মানতে দেখা যায়নি খরুলিয়া পশুর হাটে।

হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটের সামনে কন্ট্রোল রুম থেকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মানতে সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে। মাস্ক পরতে ও হাত ধুতে বলা হচ্ছে বারবার। কিন্তু সেখানে কাউকে হাত ধুতে দেখা যাচ্ছে না।

হাটের ভেতরে ঢুকে দেখা যায় পশুর ব্যাপারীদের অনেকের মুখে নেই মাস্ক। জিজ্ঞাসা করলেই অভিন্ন জবাব-মাস্ক আছে এখন খুলে রাখছি তবে সব সময় পরি।

রামু থেকে গরু নিয়ে খরুলিয়া হাটে এসেছেন ব্যাপারী হানিফ। মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সব সময় মাস্ক পরি। তবে এখন বেশ গরম, তাই খুলে রেখেছি। চা খেতে আসছিলাম তো,তাই এখন পরিনি।

গরুর হাটে ক্রেতা আছে বিক্রি কম উল্লেখ করে তিনি বলেন,আমরা ৫টি গরু নিয়ে আসছি। প্রত্যেকটি গরুর দাম দেড় লাখের ওপরে। এখন পর্যন্ত একটা গরু বিক্রি করতে পারিনি। কী হবে বুঝতে পারছি না।

হাটে গরু কক্সসবাজার থেকে হাটে গরু কিনতে এসেছেন সাইফুল হাসান (সেকুল) বলেন, হাটে যেখানে দরদাম হচ্ছে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। মাইকেও বারবার মাস্ক পরার কথা বলছে। কিন্তু কেউ তা মানছে না।

গরুর হাটে কাজ করা এক যুবক বলেন, আসলে আমরা চেষ্টা করছি, জোর তো রতে পারি না। স্বাস্থ্যবিধি বলতে যা বোঝায়, তা মানছেন না গরুর ব্যাপারীরা।

তিনি বলেন,আমাদের টিমে দেড়শতাধিক সদস্য কাজ করছেন। আমরা মানুষকে বোঝাচ্ছি। হাটে কেউ যদি মাস্ক খুলে ফেলেন, তা আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয়। তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

গাবতলী পশুর হাটে দায়িত্ব পালন করছিলেন দারুস সালাম থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জুয়েল আহমেদ। তিনি বলেন, হাটে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেক কে মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। যাদের কাছে নেই, তাদের সকলকে মাস্ক সরবাহ করা হচ্ছ। কিন্তু অনেক ব্যাপারী হাটের ভেতরে ও বাইরে মাস্ক পরছেন না। অনেকে আবার থুতনির মধ্যে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখছেন। তাদের নাকি গরম লাগে।

করোনা পরিস্থিতিতে খরুলিয়া গরুর হাটে ক্রেতার বিক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি। চকরিয়ায় থেকে হাটে এসেছেন রমজান আলী। তিনি বলেন, কাস্টমারই আছে। অনেকে দেখতে আসতেছে, দরদাম করে নিবো বলেই চলে যাইতেছে, কি যে করি। পরশু আইছি, মাত্র একটি গরু বেঁচতে পারছি।

খরুলিয়া হাটের ইজারাদার আলাউদ্দিন সিকদার বলেন, খরুলিয়া অনেক বড় গরুর হাট।এখানে আমাদের ১৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমাদের তেমন কিছু করার তো নেই। হাট বাজারে এরকম হবেই।

অন্যদিকে হাটে বিধিনিষেধ ভঙ্গ করলেও‌ প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে এব্যাপারে তৎপরতা চালাতে দেখা যায়নি।