১৭১২ মিনিট আগের আপডেট; রাত ১:৩১; মঙ্গলবার ; ১৫ এপ্রিল ২০২৪

মহেশখালী ভূমি অফিসে খারিজকৃত খতিয়ান পুনরায় সৃজনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১৫:১৮

মহেশখালী ভূমি অফিসে কুটকৌশলে খারিজকৃত খতিয়ান পুনরায় সৃজনের অভিযোগ উঠেছে মাংকু দাশ ও শিমুল দে (নাজির) এর বিরুদ্ধে। এনিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহেশখালী বরাবর ড়শ ২৯ আগষ্ট একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী গোরকঘাটা সরকার পাড়ার বাসিন্দা পুঁইক্যা সরকার গং ও স্বপন সরকার গং।

ভুক্তভোগী পুঁইক্যা সরকার ও স্বপন সরকার আবেদনে লিখেন, ইতিপূর্বে বাতিলকৃত নামজারী জমাভাগ আবেদন নং- ১৯৪৩ পরেও পুনরায় ২৪০৩ নং নামজারী ও জমাভাগ এর আবেদন মহোদয়ের কার্যালয়ে দাখিল করেন। উক্ত নামজারী মামলা আপনার কার্যালয় কর্তৃক ১৩/০১/২০২১ ইং তারিখের আদেশে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত, কক্সবাজার প্রচারিত * ২য় পৃঃ ১ কঃ দেখুন মহেশখালী ভূমি অফিসে খারিজকৃত এর অপর আপীল মামলা নং ১০৬/১৬ এর খতিয়ান নং-৩৪ দাগ নং ৫৪২,৫৪৩ উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় ১৪/০৭/২০২১ তারিখ বাতিল করা হয়।

বর্তমানে দাখিলকৃত ২৪০৩ মামলা পুনরায় চালু করে অনুমোদনের জন্য আবেদনকারী (মাংকু দাশ) কিছু প্রভাবশালী মানুষের সহযোগিতায় পাঁয়তারা করে আসছে। অভিযোগে তিনি আশংকা করে লিখেন, মামলা নিস্পত্তির আগে খতিয়ান সৃজন করা হলে এজমালীভুক্ত ওয়ারিশগনের মধ্যে বিরোধপূর্ণ সংঘর্ষ হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে।

এমতাবস্থাল ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিরোধীয় জমির উপর বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা জজ, কক্সবাজার এর অপর আপীল নং-১০৬/১৬ এবং বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালত, মহেশখালী এর সরসে নিরসে বিভাগের আবেদন নং-৯৩৭/২১ নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত খতিয়ান সৃজন বন্ধ রাখার জন্য আবেদনে উল্লেখ করেন।

অভিযোগকারীগণ ভূমি সহকারী বরাবর নামজারীর বিরুদ্ধে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কপি সহ আপত্তি জানান। ভূমি মহোদয় অপত্তি গ্রহন করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নাজির বরাবরে পাঠালে নাজির বলেন, “উক্ত খতিয়ান ইতিমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে। অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার দরকার নেই”। অভিযোগকারীগণ বলেন, “আইনগত বাধ্যবাধকতার কারণে আমরা অভিযোগপত্র দিয়ে গেলাম। প্রাপ্তি স্বীকার পত্র চাইলে পরের দিন যোগাযোগ করতে বলেন।

অভিযোগকারীগণ পরেরদিন ৩০/০৮/২০২১ইং তারিখে যোগাযোগ করলে বলেন, ফাইল আমার হাতে নেই। প্রধান সহকারীর সাথে যোগাযোগ করেন”। ০১/০৯/২০২১ইং তারিখ অভিযোগকারীগণ প্রধান সহকারীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র দেন।

কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় ০২/০৯/২০২১ইং তারিখ তৎকালীন ভূমি সহকারী মহোদয় জনাব এস এম আলমগীর এর স্বাক্ষরে বাতিলকৃত (১৪/০৭/২০২১) খতিয়ানকে পুনরায় এস এম আলমগীরের নামে ডিজিটাল জালিয়াতির মাধ্যমে মাংকু দাশের নামে সৃজন করে দেয় যার খতিয়ান নং-২৭১৯ এবং ডিসিআর নং-২৮৮৭৩, তারিখ- ০২/০৯/২০২১ইং পুঁইক্যা সরকার  ও স্বপন সরকার জানান, এর  আগেও একই খতিয়ানের বিষয়ে ৯ মার্চ ২১ ইং তারিখ সুত্র: অপর ৭২/১৫ অপর আপীল ১০৬/১৬ ইং নং মামলার বিষয়ে নামজারী ও জমাভাগ মামলা মূলে সৃজিত খতিয়ান বন্ধ রাখার আবেদন করা হয়েছিল। ওই সময়ের তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৪/০৭/২১ তারিখ খতিয়ান ৫৪২ দাগের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় নামজারী আবেদন বাতিল করেন।

অভিযোগে প্রকাশ, নাজির শিমুল দে মহেশখালী পৌরসভার স্থায়ী বাসিন্দা হয়। এলাকার প্রভাবশালী মহলের সাথে তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ। ভূমি অফিস তার বাড়ীর অনেকটা কাছে হওয়ায় সে বেপরোয়া। কাওকে পাত্তা দিতে চায় না। তার কু-কর্মের বিরুদ্ধে বললে, ভূমি অফিসে ঢুকতে বারণ করে। মাংকু দাশের সাথে তার সম্পর্ক অতি গভীর। অবৈধ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তারা উভয়ে পরস্পর যোগসাজসে বাতিলকৃত খতিয়ানকে সৃজন করার কু-কর্মটি সংগঠিত করে। চাকুরী জীবনে নাজির শিমুল কখনো মহেশখালী ইউএনও অফিস, কখনো ভূমি অফিস এভাবেই চাকুরীরত। খুটির জোর থাকায় মহেশখালীর বাহিরে তাকে চাকুরী করতে হয়নি। 

তারা আরো জানান,  মাংকু দাশ  ভূমি অফিসে বহিরাগত ডিজিটাল ভূমি সেবা প্রদানের আইটি বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করার  সুবাদে এবং ভূমি অফিসের নাজির শিমুল দে এর সাথে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে সঠিক তথ্য গোপন করে পুনরায় আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে ২৭১৯ নং খতিয়ান সৃজন করেন।

তারা অভিযোগে আরো বলেন, মামলার বিবাদী মাংকু দাশ প্রকাশ নিলয় গোরকঘাটা মৌজার বিএস ৩৪ নং খতিয়ান এর দাগ নং ৫৪২,৫৪৩ এর সমস্ত জায়গা নিয়ে ২০১৫ সাল হতে ওয়ারিশগণের মধ্যে বিভাগের মামলানং ৭২/১৫ এবং অপর আপীল নং-১০৬/১৬ সমনে থাকা অবস্থায় সুকৌশলে তার মা এবং মাসীদের কাছ থেকে হিন্দু দায় ভাগ আইন অমান্য করে ওয়ারিশগণের গোপনে হেবা দলিল গ্রহণ করে কয়েকদফা নামজারী মামলা করে ব্যর্থ হয়ে পরবতীর্তে ২৪০৩ নং নামজারী মামলা এর মাধ্যমে খতিয়ান সৃজন করে। কিন্তু দায়ভাগ অধিনে কন্যাগণ শুধুমাত্র জীবন সত্বের মালিক হয়।

তারা জানান, মাংকু দাশ প্রকাশ নিলয় মহেশখালী ভূমি অফিসে বহিরাগত আস্তাভাজন হওয়ার কারণে ও কতিপয় প্রভাবশালী বন্ধুর সহযোগিতায় ভুমি অফিস কেব্যবহার করে  আমাদেরকে বিভিন্নভাব হয়রানি করে আসছে। আমরা এর প্রশাসনিক ব্যবস্থা চাই।

এ বিষয়ে মহেশখালী ভূমি অফিসের  নাজির শিমুল দাশের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খতিয়ান সৃজনের বিষয়ে আমার কোনো হাত নাই এটি অফিসের বিষয়। আমাকে যেই বিষয়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে তা আমি কিছুই জানিনা।