১১৮৮ মিনিট আগের আপডেট; রাত ২:৩১; বৃহস্পতিবার ; ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

চকরিয়ার বমুবিলছড়িতে আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি ২০ নভেম্বর ২০২২, ১৬:৪৭

চকরিয়ার বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে পেশিশক্তির জোরে অন্যের জমিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।

বমুবিলছড়ির নয়াপাড়ার বাসিন্দা মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে মোঃ আলীসহ ৭ জন অভিযুক্ত ব্যক্তি এই পেশীশক্তির দেখাচ্ছে বলে জানা গেছে।

বমু মৌজার খতিয়ানভূক্ত জমি অবৈধভাবে দখলে নিতে জোরপুর্বক অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অপচেষ্টার ঘটনায় ভূক্তভোগী পল্লী চিকিৎক নুর আহাম্মদ ও তার ছেলে মিনহাজ উদ্দিন বাদী হয়ে গত কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি এমআর মামলা (১৯৮৬/২০২২) দায়ের করেছেন।

এ মামলায় বিবাদি করা হয়েছে বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মোঃ আলী, আবদুল লতিফের ছেলে মিজানুর রহমান, মৃত মোঃ পেঠানের ছেল আবদুল লতিফ, মোঃ আলীর ছেলে মিজানুর রহমান, মৃত নজির আহমদের ছেলে সব্বির আহমদ, মৃত আবদুর রহমানের ছেলে মোঃ ইমরান ও ফরহান শাহিনকে।

মামলার অভিযোগে জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার বমু মৌজায় মৃত আব্দুল হাকিমের নামীয় বিএস খতিয়ান নং-১৪৫/১ এর ২৩২৭ দাগের জমি ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত হয়ে আহমদ হোসেন বিগত ২৭/৮/৯২ তারিখে ৪০৪৫ নং দলিল মূলে সে জমি বিক্রি করেন মরিয়ম বেগমকে।

পরবর্তীতে নামজারীর মাধ্যমে মরিয়ম বেগেমের নামে বিএস খতিয়ান ৪৬১ সৃজন হলে সেই জমি তার সহোদর ভাই নুর আহমদকে ইসলামিক শরিয়ত মতে মৌখিকভাবে হেবা করেন।

এরফলে ২৩২৭ দাগের বিরোধীয় ৫ শতক জমি নামজারীর মাধ্যমে ‘দ্যা রেজিস্ট্রেশন এমেনমেন্ড অ্যাক্ট ২০০৪’ এর ২৫ নং আইনের ক্লাস (এএ) মতে বিগত ১১/৯/১৭ তারিখে ৩৯৪৬ নং হেবা দলিল মূলে চকরিয়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে নুর আহমদের নামে দলিল সম্পাদিত হয়।

পরে সেই জমি নুর আহামদ তার ছেলে মিনহাজ উদ্দিনকে গত ২৮/০১/২০২১ তারিখে ১১/২১ নং হেবা দলিল মূলে চকরিয়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে দলিল নিবন্ধন করেন। যা বিএস নামজারী মামলা নং-৪৬০৮(রী-র) ২০২০-২০২১ মূলে ৮৮০ নং খতিয়ানের অন্তর্ভূক্ত হয়।

সরেজমিন পরিদর্শনে ও তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, দলিল, দাখিলা ও দখলসূত্রে এ জমিতে নুর আহামদ ও মিনহাজ উদ্দিন গত ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা করে আসছে।

ক্রয় ও দখলসূত্রে এ জমির চৌহদ্দি- উঃ আশরাফ আলীর বাড়ি, দক্ষিণে- চিহ্নিত দাগের বাকী জমি, পূর্বে- স্কুল ও পশ্চিমে- আব্দুল লতিফের অংশ। মামলার বাদী মিনহাজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, বিবাদি মোঃ আলী গং পেশীশক্তির বলে তার জমিতে দখলের পরিকল্পনা নিলে তিনি বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি এমআর মামলা (১৯৮৬/২০২২) দায়ের করেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ‘সার্বিক বিবেচনায় এসি ল্যান্ড, চকরিয়াকে বিরোধীয় জায়গার বিষয়ে সরেজমিন তদন্তপূর্বক মতামতসহ রিপোর্ট দেওয়ার জন্য’ নির্দেশ দেন।

একই সাথে আদালত ‘অফিসার ইনচার্জ, চকরিয়া মডেল থানাকে বিরোধীয় জায়গায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন। সে মূলে চকরিয়া থানার এএসআই মোঃ মামুনুর রশিদ স্বাক্ষরিত ‘শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার নোটিশ’ উভয় পক্ষকে জারি করে প্রাপ্তি স্বীকার নেন।

মিনহাজ উদ্দিন বলেন, আদালত ও পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে বিবাদী মোঃ আলী গং বিরোধীয় জমিতে ১৭ নভেম্বর গভীর রাতে দলবল নিয়ে স্থাপনা নির্মাণের জন্য ঢালাই দিয়েছেন। অভিযুক্ত মোঃ আলী জানান, বিরোধীয় জমির দাগ থেকে তিনিও জমি ক্রয় করেন। সে কারণে তিনি জমি দখলে নিচ্ছেন।

‘আদালতের নিষেধ অমান্য করে কেন স্থাপনা নির্মাণ করছেন’ প্রশ্নের উত্তর তিনি এড়িয়ে যান। এ ঘটনায় গত ২৪ নভেম্বর দুপুরে চকরিয়া থানার এসআই সারোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বমুবিলছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল কাদের।

এ সময় জানতে চাইলে মঞ্জুরুল কাদের চেয়ারম্যান বলেন, উভয়পক্ষ একই জমি দাবী করছেন। মীমাংসা করার জন্য বৈঠকে বসেছিলেন। সমাধা হয়নি। পুনরায় বৈঠকে ঝামেলার আশংকায় মীমাংসা করা যাচ্ছে না।

গত শুক্রবার দুপুরে চকরিয়া থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই গোলাম সারোয়ার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও বিবাদীপক্ষের অভিযুক্তরা কেউ সেখানে উপস্থিত হননি। স্থানীয় চেয়ারম্যান, চৌকাদার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এসআই গোলাম সারোয়ার বিবাদীপক্ষের মোঃ আলীর মেয়ের জামাতা আরিফকে বিরোধীয় জমিতে পুনরায় কাজ না করতে নিষেধ করেন। এ আদেশ তার শ্বাশুর মোঃ আলীকে জানিয়ে দিতে বলেন। বিরোধীয় জমিসংক্রান্ত কোনপ্রকার দাবী দাওয়া থাকলে কাগজপত্র নিয়ে তাদেরকে থানায় যেতে নির্দেশ দেন।