৯৩১ মিনিট আগের আপডেট; রাত ৩:০৬; বৃহস্পতিবার ; ২২ মার্চ ২০২৩

পিছিয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পাঁচ বাইপাস নির্মাণ

আসিফ সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম ঃ ২৫ জানুয়ারী ২০২৩, ১৩:৩৮

পণ্য পরিবহন ও যানবাহন চলাচল তুলনামূলক নির্বিঘ্ন করতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ ৫টি বাইপাস নির্মাণকাজ পিছিয়েছে।

২০২৩ সালের মধ্যেই নির্মাণ শুরুর লক্ষ্য থাকলেও সেটি পিছিয়ে ২০২৫ সাল নাগাদ সময় লাগবে। আর নির্মাণ শেষ করতে ২০২৭ সাল পুরোটাই লাগতে পারে।

মূলত জাপানি কম্পানি এই প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি রিপোর্ট জমা না দেওয়ায় পরবর্তী ধাপ শুরুতে বিলম্বিত হচ্ছে। এর ফলে পুরো প্রকল্পের কাজই পিছিয়ে যাচ্ছে।

মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হবে ২০২৬ সালের মধ্যভাগে, সেই বন্দর থেকে প্রাথমিকভাবে দিনে গড়ে ৪ হাজার পণ্যবাহী গাড়ি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাবে। বিদ্যমান দেড়-দুই লেনের সেই মহাসড়ক বিপুল গাড়ির চাপ সামাল দিতে পারবে না।

আর ২০২৬ সালের আগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করাও হচ্ছে না। এই অবস্থায় গভীর সমুদ্রবন্দরের পণ্যবাহী গাড়ি এবং কক্সবাজারমুখী পর্যটকদের বিপুল গাড়ির চাপ সামাল দিতে এই মহাসড়কে ৪টি বাইপাস এবং একটি ওভারপাস নির্মাণের সিদ্ধান্ত ছিল সরকারের। এ ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছিল জাপানি প্রতিষ্ঠান জাইকা।

উদ্দেশ্য হচ্ছে, এ সব স্থানের যানজট এড়িয়ে নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করা। সেই বাইপাস প্রকল্পও ২০২৬ সালের আগে নির্মিত হচ্ছে না। জানতে চাইলে বাইপাস নির্মাণের প্রকল্প পরিচালক শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জাপানি প্রতিষ্ঠান ‘নিপ্পন কোয়েই’ সেই বাইপাস-ওভারপাসের মাঠ পর্যায়ে জরিপ শেষ করে।

ফেব্রুয়ারি মাসে স্টাডি রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই আমরা ডিপিপি তৈরি করব। এর পর ডিপিপি একনেকে অনুমোদনের পরই আমরা কনসালটেন্ট নিয়োগে যাব। কাজটি দ্রুত করতে আমরা কনসালটেন্ট নিয়োগের প্রক্রিয়াটি এগিয়ে রাখব।

তিনি বলেন, ডিপিপি, প্রকল্পের ডিজাইন তৈরি ও দরপত্র তৈরি করতে ২০২৪ সাল নাগাদ সময় লাগবে। এরপর ঠিকাদার নির্বাচন করে কাজ শুরু করতে ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা গেলেই ওই সময়ের মধ্যে নির্মাণ সম্ভব হবে।

সড়ক ও জনপথ দপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ডিপিপি অনুমোদনের পরই সড়কের ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব জেলা প্রশাসনে যাবে। এর পরই বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষ করে জমির ক্ষতিপূরণ পাবেন মালিকরা। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের বাইপাসগুলো হল-চকরিয়া, লোহাগাড়া, দোহাজারী ও পটিয়া। আর ওভারপাস বা ফ্লাইওভার হচ্ছে সাতকানিয়ার কেরানিহাটে। সেই বাইপাসগুলো নির্মাণের আগেই এই মহাসড়কে গুরুত্বপূর্ণ চারটি ছয় লেনের সেতু নির্মাণকাজ এখন শেষের পথে। এই অবস্থায় এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের নির্বিঘ্ন যাত্রার সুফল পেতে আরো অপেক্ষায় থাকতে হবে।

তবে সুখের বিষয় হচ্ছে, চলতি বছরই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে। জানা গেছে, ১৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি পটিয়া থেকে দোহাজারী পর্যন্ত দেড় লেনের; এর পর দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত দুই লেনের সড়ক। পটিয়া অংশে অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক আছে এবং সড়ক আঁকাবাঁকা। যদিও সেই বাঁক কিছুটা সোজা করার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে।

কিন্তু কক্সবাজারমুখী পর্যটক এবং রোহিঙ্গা চাপ যে হারে বাড়ছে তাতে সড়কটি এখনই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এখন কক্সবাজার ঘিরে ব্যাপক মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। ফলে তখন পরিবহন চাপ আরো বেড়ে যাবে। সেই বাড়তি চাপ সামাল দিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি ছয় লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয় সরকার। সেটি নিয়ে স্টাডি করছে জাপানি আরেকটি প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে।

কিন্তু কবে নাগাদ সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। এই অবস্থায় বাইপাস নির্মাণ করে সাময়িক সুফল খোঁজার চেষ্টা করেছিল জাইকা। কিন্তু সেটি পিছিয়ে গেছে।