আমার কক্সবাজার ডেস্ক: ১৩ মার্চ ২০২৩, ২০:৫৮
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীর একটি বলছে, একটি বৌদ্ধ মন্দিরে আশ্রয় নেওয়া অন্তত ২৮ ব্যক্তি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় শান প্রদেশের নাম নিন গ্রামে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
কারেনি ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্সের (কেএনডিএফ) পোস্ট করা একটি ভিডিওতে কিছু মরদেহ দেখা গেছে, দৃশ্যত যাদের দেহে গুলির ক্ষত রয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশ কিছু লোকের গায়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কমলা পোশাকও রয়েছে।
বিবিসি সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, দুই বছর আগে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখল করার পর থেকে দেশটিতে সেনাবাহিনী এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রাণঘাতী লড়াই চলছে। ইদানীং তার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রাজধানী নেপিট এবং থাইল্যান্ডের সীমান্তের মধ্যবর্তী এই অঞ্চলে কিছু মারাত্মক লড়াই হয়েছে। গত শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার কাছাকাছি সময় জঙ্গি বিমান এবং কামান দিয়ে গোলাবর্ষণের পর সেনাবাহিনী ওই গ্রামে প্রবেশ করে এবং গ্রামের একটি মঠের মধ্যে লুকিয়ে থাকা মানুষজনকে হত্যা করে বলে কেএনডিএফ জানিয়েছে।
ওই গোষ্ঠীর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অন্তত ২১টি মরদেহ মঠের ভেতরে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এদের মধ্যে তিন জনের গায়ে রয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কমলা পোশাক। দেহগুলোতে একাধিক গুলির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। মঠের দেয়াল বুলেটের আঘাতে ঝাঁঝরা হয়েছে বলেও দেখা গেছে।
স্থানীয় পত্রিকা কান্তারওয়াদ্দি টাইমস কেএনডিএফের একজন মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলেছে: ‘মনে হচ্ছে যে (সেনাবাহিনী) তাদের মঠের সামনে লাইন করে দাঁড় করিয়েছে এবং সন্ন্যাসীসহ সবাইকে নির্মমভাবে গুলি করে মেরেছে।’
কেএনডিএফ বিবিসিকে জানিয়েছে, তারা ছোট ওই গ্রামটির কাছাকাছি আরেক জায়গা থেকে বাকি সাতজনের মরদেহ খুঁজে পেয়েছে।
এ ধরনের ঘটনার সত্যতা যাচাই করা কঠিন। তবে মিয়ানমারের এই অঞ্চলে, যেখানে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ দেখা গেছে, সেখানে নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে এমন বর্বর আক্রমণ নতুন ঘটনা নয়। নাম নিন গ্রামটি শান প্রদেশ কায়াহ প্রদেশের দিকে একটি প্রধান রাস্তা। সামরিক বাহিনী মনে করে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র সরবরাহের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট।