৩৮ মিনিট আগের আপডেট; রাত ৭:২৩; বৃহস্পতিবার ; ২৮ মার্চ ২০২৪

পঙ্গু হয়ে বাঁচার চেয়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করা শ্রেয়!

তানভীর মোর্শেদ তামীম ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৬:০৮

বর্তমান সময় নিয়ে চিন্তা করলে বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের একটা সাড়া জাগানো উক্তি চোখের সামনে ভেসে উঠে।তিনি হয়তো "সমাজ পরিবর্তন" কেন্দ্রিক চিন্তা চেতনা থেকে এই কথাটি বলেছিলেন -এই পৃথিবী কখনো খারাপ মানুষের খারাপ কর্মের জন্য ধ্বংস হবে না, যারা খারাপ মানুষের খারাপ কর্ম দেখেও কিছু করেনা তাদের জন্যই পৃথিবী ধ্বংস হবে।

আজকাল সমাজের প্রতিটি স্তর যেভাবে দিন দিন ভয়ংকর রূপ ধারণ করছে তা এখন আর বলার অবকাশ রাখে না। চারিদিকে শুধু অবিচার, অন্যায়,অনিয়ম। যেন পুরো সমাজ ব্যবস্থা বিশাল একটা মৃত্যুপুরী। তারপর,যদি যুব সমাজের কথা বলি তাহলে দেখবো যুব সমাজ এখন আর আগের ন্যায় সমাজ কেন্দ্রিক চিন্তা করে না।

কারণ তারা এখন বেশিরভাগই সুবিধাবাদী,আবার অনেকে অন্ধকার পথে হাটছে স্বাচ্ছন্দ্যে,কেউ কেউ মাদক নিয়েও খেলছে নির্ভয়ে। মোটকথা সমাজটার যারা পরিবর্তন করার সামর্থ্য রাখে তাদের আজ বেশিরভাগ নিজের ভেতরকার শক্তিকে কবর দেওয়ার পথে যেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আসলে এভাবে সমাজটার পরিবর্তন সম্ভব না। কেননা,সমাজ পরিবর্তন নিয়ে কেউ এখন আর চিন্তা করে না বরং নিরবে কিছু ভদ্র সুশীল মুখে পরিবর্তনের কথা বলে সমাজ নষ্টকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এটা মারাত্মক একটা খারাপ দিক। আমার মনে হয়,এটার কারণে শত চেষ্টার পরও কোন পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে না।

এইসব ভদ্র সুশীল জানে, "কেউ একজন অপরাধ করছে,কিন্তু তবু চুপ থাকে, কারণ তাকে দমিয়ে দিলে সে আর তার কাছ থেকে কোন রকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।" অনেক সময় এমন কিছু ব্যক্তিকে দেখা যায়, যারা শুধুমাত্র ভোগ করার তাগিদে সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে থাকে।এখানেই আমাদের মূল সমস্যা।

আমরা নিজ স্বার্থের কাছে সবাই অন্ধ।আর এই অন্ধত্ব থেকে বের হয়ে আসতে না পারলে সমাজ জীবন চিরকালই অপরিবর্তিত থেকে যাবে,যদি আমরা সুন্দর একটা সমাজ বিনির্মান করতে চায় তাহলে আগে আমরা যারা ভদ্র সুশীল হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি তাদের পরিবর্তন হতে হবে এবং অন্যায় দেখার পর দেখে-না দেখার ভান না করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ করতে পারলে পোকা ধরা সমাজটার মধ্যে কিছুটা হলেও পরিবর্তন দেখা দিবে।

পরিবর্তনবিহীন সমাজটা কখনো সুখকর হয়ে উঠবে না,বরং অসহায় মানুষগুলো সারাজীবন অসহায় থেকে যাবে পক্ষান্তরে একটি গোষ্ঠী অসহায় মানুষগুলোকে শাসনের অজুহাতে শোষণ করে যাবে পরিবর্তন অবধি।সমাজটা আমাদের তাই এটা কেউ এসে পরিবর্তন করে দিবে এমন চিন্তা করাটা একদম মানহীন।

আমাদের সমাজ আমাদেরই পরিবর্তন করতে হবে,আর পরিবর্তনের জন্য যদি বিপ্লব দরকার হয়,তবে তাই হোক।কারণ পঙ্গু হয়ে বাঁচার চেয়ে মৃত্যুকে আললিঙ্গন করা শ্রেয়।আগা-গোড়া সমাজটাকে যে সব পোকা আকড়ে ধরে বসে আছে তাদের বিরুদ্ধে এখনই সোচ্চার হওয়ার উপযুক্ত সময় না হলে অন্ধকারে পুরো সমাজটা তলিয়ে যেতে বেশী সময় নিবে না।

আমি বলব না সমাজের সব মানুষ খারাপ,কিছু সৎ মানুষ এখনো আছে,যারা বিশাল একটা পরিবর্তন চায়,চায় সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার।সে সব মানুষের কারণেই হয়তো সমাজটা এখনো ভেঙে যায়নি,খুটিটা ধরে এখনো ঠিকে আছে।

আবার বর্তমান সরকারের সম-সাময়িক বেশ কিছু উদ্যেগকে স্বাগত জানানো উচিৎ,কেননা বর্তমান সরকার যেভাবে সকল অপরাধের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করেছে তা নিশ্চয় প্রশংসনীয় এবং সমাজ পরিবর্তনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে বলে মনে হয়।

সবশেষে সমাজ জীবনে শান্তি কামনা করে এবং পরিবর্তনের আশা ব্যাক্ত করে লেখাটুকু শেষ করছি।অনেকে হয়তো ভাবছেন কেমন পরিবর্তনের কথা বলছি আমি?পরিবর্তন বলতে,মাদকমুক্ত,সংঘাতবিহীন,অনিয়ম-অত্যাচার বিহীন একটি সমাজ ব্যবস্থার কথা বলছি।

লেখক

তানভীর মোর্শেদ তামীম

(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। আমার কক্সবাজার অনলাইন এবং আমার কক্সবাজার-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)