৩০২ মিনিট আগের আপডেট; দিন ১:৫২; শনিবার ; ১৯ এপ্রিল ২০২৪

করোনায় থেমে নেই উই ক্যান প্লাটফর্মের এ্যাকটিভ সিটিজেন্স সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া ১২ জুলাই ২০২০, ১৯:৪৩

সারাবিশ্বের ন্যায় করোনা ভাইরাস দেশের সব জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার উপর জারি করা হয়েছিলো নিষেধাজ্ঞাও।

এমন সময়ে গৃহবন্দী অবস্থায় নানান দুর্ভোগে থাকা মানুষদের পাশে নানাবিধ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কক্সবাজারের এ্যাকটিভ সিটিজেন্স এর সদস্যরা।

করোনা এই সময়ে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতন করার জন্য কখনও উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ, মাস্ক, হ্যান্ডস্যানিটাইজার বিতরণ ও ব্যবহারের নিয়মব্যাধি, জ্বর-সর্দি কাশি ইত্যাদি দেখা দিলে চিকিৎসকদের পরামর্শ সহায়তা, অসহায়দের মাঝে স্বামর্থ্য অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, স্থানীয় জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় হয়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন, বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে অসহায় মানুষদের জন্য খাদ্য সহায়তা নিয়ে পৌঁছে দেওয়া সহ নানাবিধ কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে প্রশংশা অর্জন করেছে উই ক্যান প্লাটফর্মের সদস্যরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখা যায়- উই ক্যান প্লাটফর্মের নারী সদস্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষদের স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনমূলক বার্তাগুলো পৌঁছে দিচ্ছেন। পাশাপাশি নারী সদস্যদের স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলো অধিকতর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে আলাদাভাবে এ উঠান বৈঠকগুলো পরিচালনা করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন দিবসে নানাবিধ কার্যক্রমে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সচেতনমূলক ভিডিও বার্তা, পোস্টারিং কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে মানুষকে সচেতন করছে এই প্লাটফর্মের সদস্যরা।

ব্রিটিশ কাউন্সিলের এ্যকটিভ সিটিজেন্স ইয়ুথ লিডারশীপ বিষয়ক পাঁচ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে কক্সবাজারের তরুণ ওমর ফারুক গঠন করেন উই ক্যান নামক একটি প্লাটফর্ম। যার শুরুতে সদস্য সংখ্যা ছিলো ১৮ জন। যারা পাঁচদিনব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশ গ্রহণ করেছিলো। উই ক্যান প্লাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা ও দললেতা ওমর ফারুকের সাথে কথা বলে এসকল বিষয় জানা যায়।

এসময় তিনি বলেন, উই ক্যান প্লাটফমের্র বর্তমান সদস্য সংখ্যা ২শত জন। যাদের মধ্যে নারী ও পুরুষের সংখ্যা সমান। করোনা পরিস্থিতিতে যে যেখানে আছি সেখান থেকে কিছু করার চেষ্টা করেছি। ইয়ং পাওয়ার ইন সোস্যাল এ্যাকশন (ইপসা)’র সহযোগিতায় আমরা ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রশিক্ষণটি পাই। এ প্রশিক্ষণে কিভাবে সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হই সে বিষয়ের উপর যথেষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।

প্রশিক্ষণটি গ্রহণ শেষে আমি উই ক্যান প্লাটফর্মটি গঠন করেছি। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন কিংবা অফলাইনেও নানাবিধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আমাদের সদস্যরা নানাবিধ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষদের স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতার পাশাপাশি স্বামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। আইসোলেশন সেন্টারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে করোনা পজিটিভ সদস্যদের সহায়তা করছে।

অনলাইনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন যুব, তরুণ উদ্যোক্তা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও নায়ক-নায়িকা , সাংবাদিক, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, তরুণ উদ্যোক্তা ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার সাথে কাজ করা অভিজ্ঞ লোক, চিকিৎসক, ব্যাংকার সহ নানাবিধ কার্যক্রমে দেশের এই ক্রান্তিকালে তরুণদের আরও বেশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের মধ্যদিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে যথেষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য এই উদ্যোগ চলমান রয়েছে।

আমাদের বর্তমান ফেইসবুক পেইজে প্রতিটি লাইভেই নুন্যতম ১-২ হাজার পাঠক সংখ্যা ও সর্বোচ্চ ৭ হাজার পর্যন্ত পাঠক দেখতে পেয়েছি। আমাদের কাজকে মানুষ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আমরা অনলাইন কার্যক্রমে এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজারেরও অধিক মানুষের কাছে পৌঁছেছি। কক্সবাজারের মানুষদের সুবির্ধার্থে স্থানীয় ভাষায় আমাদের কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করায় বেশ গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছে।

পাশাপাশি কক্সবাজার সদর উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দু’জন সদস্যদের মাতাকে দুটি সেলাই মেশিন, সাম্প্রতিক সময়ে ঘুর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ১২টি পরিবারকে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে পাশে দাঁড়িয়েছি। আমাদের প্লাটফর্মের অনেক সদস্য অনলাইন অর্গানিক শুটকি সংগ্রহ ও বিক্রয় করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে পাশাপাশি কিছু অর্থ গরীবদের সহায়তায় ব্যয় করছি।

জেলা শহরের বিভিন্ন চিকিৎসকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে স্বাস্থবিষয়ক রোগীদের সেবা গ্রহণের সংযোগ তৈরি করেছি। করোনা পরিস্থিতি ঠিক হয়ে গেলেও সক্রিয় নাগরিক হিসেবে আমাদের কাজ চলমান থাকবে।